বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি আবিষ্কার করেছেন যে, সিগারেটের ছাই দিয়ে পানি হতে প্রায় ৯৬ শতাংশ বিষাক্ত আর্সেনিক ভাইরাস দূর করা সম্ভব। আর্সেনিক থাকার প্রবণতা আধুনিক নগরায়নের ফলে মাটির নিচের পানিতে বেড়ে যাচ্ছে। পুরো বিশ্ব থেকেই ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক দূষণের মোটামুটি ২০টি ঘটনা জানা যায়, এশিয়াতে এর মধ্যে ৪টি ঘটনাই পাওয়া গেছে। যেসব দেশ আর্সেনিকের কবলে আক্রান্ত তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশ গুলো হল চায়না, চিলি, হাঙ্গেরি, মেক্সিকো ইত্যাদি। বাংলাদেশের পানীয় জলেও আর্সেনিক-জনিত বিষক্রিয়া এক মারাত্মক চেহারা নিয়েছে৷

আর্সেনিক মূলত একপ্রকার রাসায়নিক উপাদান যা ধাতু এবং অধাতুর মাঝামাঝি একটি পদার্থ। এগুলোকে বলে মেটালয়েড। পানিতে স্বল্প মাত্রায় আর্সেনিক সব সময়ই থাকে। কিন্তুে যখনই এই মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয়ে যায়, তখনই তা পানকারীর শরীরের নানা রকম রোগের উপসর্গ তৈরি করে এবং পরবর্তীতে সেই সকল রোগব্যাধিকে মারাত্মক পর্যায়ে নিয়ে যায়।
আর্সেনিক দূরীকরণে অনেক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে অনেক আগে থেকেই তবে তা অনেক ব্যয়বহুল প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য। প্রাকৃতিক বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করে কিভাবে আর্সেনিক দূর করা যায় তার চেষ্টা বিজ্ঞানীরা চালিয়ে যাচ্ছেন বহু বছর ধরে। এতদিন সাফল্য না আসলেও বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ঠিকই সাফল্য বয়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। বেইজিং এর North China Electrical Power University এর গবেষক Jiaxing Li এবং তার দল আবিষ্কার করেন সিগারেটের ছাই আর্সেনিক দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা সিগারেটের ছাইয়ের সাথে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড মিশিয়ে আর্সেনিক মিশ্রিত পানিতে পরীক্ষা করেন এবং ফলাফলে দেখতে পান প্রায় ৯৬ শতাংশ আর্সেনিক এই পদার্থটি দূর করতে সক্ষম হয়েছে। যা আসলেই একটি বিরাট সাফল্য।
যেহেতু অসংখ্য পরিমাণে সিগারেটের ছাই প্রতিদিনই বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ ফেলে দেয় তাই এই বর্জ্যটি ব্যবহার করলে অল্প খরচে আর্সেনিক দূর করা সম্ভব হবে। আশা করি নতুন এই আবিষ্কার মানুষরে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেকখানি হ্রাস করতে সক্ষম হবে।
Post a Comment