মায়ান ক্যালেন্ডারের কথা মনে আছে ? যেই ক্যালেন্ডারের উপর ভিত্তি করে ২১-১২-২০১২ তারিখে পৃথিবী ধ্বংস হবে কথা ছিল ।
মায়ান এই দিনপঞ্জিকার উপর ভিত্তি করেই নানা গল্প এবং পৃথিবী ধ্বংসের জল্পনা-কল্পনা গড়ে উঠেছে অনেক বছর ধরেই। আজকে যখন মানুষ আমার এই লেখাটি পড়বে তখন আর এক বারের মতো পৃথিবী ধ্বংসের জল্পনা-কল্পনা ব্যর্থ হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। কারণ সেই তারিখ পার হয়ে গেছে অনেক দিন আগেই । পৃথিবী ধ্বংস হবার নতুন একটি তারিখ ঠিক করেছন বিজ্ঞানীরা ।
২৮৮০ সালের ১৬ মার্চে গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন মহাকাশ গবেষক রা । ১৯৫০ ডিএ নামের একটি গ্রহাণুর সত্যিই ওই তারিখে পৃথিবীতে আঘাত হানার আশংকা রয়েছে।
কিন্তু ব্যাপার টি নিয়ে এখনি চমকে ওঠার কারণ নেই তেমন । এ গ্রহাণুর পৃথিবীতে আঘাত হানার আশংকা মাত্র ০.৩ শতাংশ । তবে এতেও খুসি হবার তেমন কারন নেই ।
অন্য সকল গ্রহাণুর চেয়ে পৃথিবীতে এর আঘাত হানার আশংকা প্রায় ৫০% বেশি। এবার বোধহয় আশা-নিরাশার দোলাচলে পড়ে যাবেন অনেকেই।
যদি গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হানে তা হলে তা ৪৪,৮০০ মেগাটন টিএনটি’র ক্ষমতা নিয়ে আঘাত হানবে। আর এক মেগাটন মানে ১০ লাখ টন সে কথা অনেকেরই জানা আছে। তা হলে ৪৪,৮০০কে ১০ লাখ গুণ করলে সংখ্যাটি দাঁড়াবে বিশাল।
গ্রহাণু ১৯৫০ ডিএ ১৯৫০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম আবিষ্কৃত হয় । ১৭ দিন পর্যবেক্ষণের পর এটি অর্ধশতকের জন্য দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়। ২০০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আবার দেখা যায় ।
পৃথিবীমুখী কক্ষপথ ধরে এটি সেকেন্ডে ১৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটছে। এ গ্রহাণুর ব্যাসার্ধ প্রায় ১০০০ মিটার এবং এটি ২ ঘণ্টা ৬ মিনিটে আবর্তিত হচ্ছে।
এ গতিতে আবর্তনের কারণে গ্রহাণুটির ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা । কিন্তু এখনো তেমন কিছু ঘটেনি বা ঘটার কোনো আভাসও পাওয়া যাচ্ছে না ।
পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এটি ঘণ্টায় ৩৮ হাজার মাইল বেগে আছড়ে পড়তে পারে আটলান্টিক মহাসাগরে। এ ঘটনাটি ঘটতে পারে ২৮৮০ সালের ১৬ মার্চ।
সুদূর অতীতেও পৃথিবীতে এমন বিশালাকায় গ্রহাণু আছড়ে পরার ইতিহাস আছে। প্রায় সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে এরকম এক গ্রহাণুর আঘাতেই পৃথিবীর বুক থেকে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ডায়নোসোর । ৮৬৭ বছর পরে যদি সত্যিই পৃথিবীতে আঘাত হানে এই গ্রহাণু ১৯৫০ ডিএ তা হলে মুছে যাবে মানব সভ্যতা।
Post a Comment