বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মালয়েশিয়ায় মারা যান তিনি।

প্রবাসে আপনজন থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা কোকোর মৃত্যু সংবাদ শুনে শোকে বিহবল হয়ে পরেন মা খালেদা জিয়া। মুহূর্তের মধ্যে সে শোক ছড়িয়ে পরে গুলশান কার্যালয় থেকে বিএনপিসহ ২০ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। রাজনৈতিক ও সমাজিক অঙ্গনেও নেমে আসে শোকের ছায়া। রাত ৮টায় গুলশান কার্যালয়ে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকার্ত খালেদা জিয়াকে স্বান্ত্বনা জানান তিনি।
মালয়েশিয়ার বিএনপির নেতা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ নয়া দিগন্তকে জানান, রোববার বাদ যোহর মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় মসজিদ নেগারায় জানাজা নামাজ শেষে কুয়ালালামপুর মালয় ইউনিভার্সিটি সেন্টারে হিমঘরে রাখা হবে কোকোর লাশ। সোমবার সকালে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
মালয়েশিয়ায় এ জানাজায় অংশ নিতে পারেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। খুব শিগগিরই কোকোর লাশ দেশে আনা হবে বলে বিএনপির তরফ থেকেও জানানো হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সাংবাদিকদের জানান, কোকোর লাশ দেশে আনা এবং দাফন বিষয়ে পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মৃত্যুকালে কোকোর বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। সাত বছর আগে দেশ ছাড়ার পর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও দুই মেয়ে জাহিয়া ও জাফিয়াকে নিয়ে কুয়ালালামপুরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকছিলেন তিনি।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও রাজনীতির প্রতি তেমন আগ্রহ ছিল না কোকোর। ব্যবসা-বাণিজ্যে মনোযোগ ছিল তার। ২০০১ সালে বিএনপির সরকারের সময়ে জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, পরে বিসিবির ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন তিনি। বিএনপির কোনো পদে না থাকলেও জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির মামলায় মা খালেদা জিয়ার সাথে বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন আরাফাত। ওই সময় তারেক রহমানও গ্রেফতার হয়েছিলেন।
কারাগারে থাকা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরলে ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই জরুরি সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান কোকো। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান তিনি। এরপর ২০১১ সাল থেকে দেশের বৈরী রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়েই মালয়েশিয়ায় প্রবাস জীবন বেছে নেন কোকো।
খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন, মায়ের সাথে কোকোর সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে সিঙ্গাপুরে। মায়ের সাথে নিয়মিতই ফোনে কথা হতো তারা। মাকে গ্রেফতার করা হতে পারে এমন সংবাদে কয়েকদিন ধরেই বিচলিত ছিলেন কোকো। গতকাল শুক্রবার রাতে মায়ের সাথে কথা বলার পর অল্প অল্প বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। আজ সকালে সে ব্যথা বেড়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে মালয়েশিয়ার ‘মালায়া’ হাসপাতাল থেকে এ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনা হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা যান তিনি।
Post a Comment