অদ্ভুতুড়ে 11:03 AM

উঠতে-বসতে চায়নাকে মানুষ কম গালমন্দ করে না।  চায়না অমুক করছে, চায়না তমুক করছে। চায়না আমাদের প্লাসটিক চাল খাওয়াচ্ছে। নিজেরাও একধারসে কুকুর মেরে খাচ্ছে। সাপ-ব্যাঙ-আরশোলা... কিচ্ছুটি বাদ নেই। গালমন্দ, ছিঃ, ছোঃ... এ সবকিছুর পরেও মাথা হেঁট হয় কুর্নিশ জানাতে, যখন আমরা শুনি, এই চায়নাতে এমন একটা শহর আছে, যেখানে গত ১০ বছরে একটাও কোনও অপরাধ হয়নি।
 
বিস্ময়ের বাকি আছে আরও। ওই শহরে, একজন মাত্র পুলিশ আছেন। যিনি, একাই সারা শহর টহল দিয়ে বেড়ান। বলার আছে, আরও কিছু। ওই পুলিশকর্মী চোখে দেখেন না। গ্লুকোমায় চোখ হারিয়েছেন সেই ২০০২ সালে। তার পরেও চাকরিটি আছে। আছে, কারও করুণায় নয়। আছে, তাঁর দক্ষতায়। যিনি একা একটা শহরকে এমন ঠান্ডা রাখতে পারেন, তাঁকে সরানো হবেই বা কেন! তাই দৃষ্টিশক্তি হারালেও, পুলিশের কাজটি রয়েছে তাঁর। রোজ নিয়ম করে পুলিশের পোশাকে বেরিয়ে পড়েন। সঙ্গে থাকেন স্ত্রী।
 
 দক্ষিণ পশ্চিম চায়নার শহর লানবা। সেখানে গেলে আপনার সঙ্গে নিশ্চিত ভাবেই দেখা হবে বছর তেতাল্লিশের ওই পুলিশ অফিসার প্যান ইয়ংয়ের। যিনি দৃষ্টি হারালেও, নিজের কাজের শহরটাকে চেনেন হাতের তালুর মতো। চেনেন সেখানকার মানুষগুলোকে। তাই, সিয়া চং পুলিশ স্টেশনের ওই একমাত্র পুলিশ আধিকারিককে সরানোর চেষ্টা হয়নি।
 
সিয়া চং রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে চারপাশের ৩৮ কিলোমিটার এলাকা। যার মধ্যে পড়ছে তিনটি প্রশাসনিক গ্রাম, ১৩টি ছোট গ্রাম, যার দায়িত্বে প্যান। গত ১০ বছরে সেখানে না হয়েছে কোনও খুন-খামারি, না চুরি-ছিনতাই, না কোনও দুর্ঘটনা! তবে, এর নেপথ্যে আরও একজনের নীরব ভূমিকা রয়েছে। তিনি প্যানের স্ত্রী তাও হংগিং। বছর ৪৬-এর ওই মহিলা লোকাল রেলওয়ে স্টেশনের রক্ষী। রোজই পুলিশ আধিকারিক স্বামীর সঙ্গে তিনিও সারা শহর চক্কর মারেন।
 
Image result for nanba chinaImage result for nanba china



এই চিনা দম্পতি যা করেছেন, সাধারণের ভাষায়, তা মিরাকল! প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারাও ভাবেননি কখনও। ভাগ্যে বিশ্বাস করেন প্যান-পত্নী। বললেন, কপালে ছিল বলেই, আমরা একসঙ্গে।
 
আসলে ছোট থেকেই অপরাধের বিরুদ্ধে সরব প্যান। তাঁর বেড়া-ওঠা পুলিশ থানা চৌহদ্দিতেই। প্যানের কথায়, আমার পদটা বড় নয় ঠিকই, তবু আমি আমার এই পুলিশের পেশাটাকে ভালোবাসি। অপরাধকে কখনও প্রশ্রয় দিইনি। আর তাঁর স্ত্রী বলেন, প্যান ওয়ার্কাহোলিক।
 
এই প্যান চোখ হারিয়ে একসময় বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন। ধরে নিয়ে ছিলেন, জীবন শেষ। জীবনের সেই চরম হতাশার সময়ে পাশে পান তাওকে। প্যানের কথায়, তাওয়ের সঙ্গে বিয়ের পর, ও ভরসা দিল। নতুন করে বাঁচতে শিখলাম। ও না থাকলে, কবেই হারিয়ে যেতাম! কৃতজ্ঞচিত্তে বলছিলেন প্যান। চিনের ওই শান্ত শহরে, তাঁদের এখন সুখের দাম্পত্য।

Image result for nanba china
Image result for nanba china

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();
Powered by Blogger.