অদ্ভুতুড়ে 9:51 PM
বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা আর নেই
বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা আর নেই 

ভৌগোলিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ভূমিকম্প-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়। দেশের ভেতরে ও সীমানা ঘিরে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের উৎপত্তি হওয়ার মতো একাধিক ফাটলরেখা (টেকটোনিক প্লেট বাউন্ডারি চ্যুতি বা পিবিএফ) রয়েছে। এ ছাড়া রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো ফাটলরেখা রয়েছে দেশের মধ্যেও। তাই ভূমিকম্প নিয়ে সাবধান হওয়া জরুরি।

বাংলাদেশে পরিচালিত দেশি-বিদেশি একদল বিশেষজ্ঞ গবেষকের একটি যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। দলটিতে জাপান, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের কয়েকজন গবেষক কাজ করেছেন।
অবশ্য তাঁদের গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জন্য আপাতত স্বস্তির কথাও রয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরের সন্নিহিত অঞ্চলে অনেকগুলো ফাটলরেখা থাকলেও নিকট ভবিষ্যতে সেগুলো বিধ্বংসী কোনো ভূমিকম্পের উৎসস্থল (এপিসেন্টার) হওয়ার আশঙ্কা কম।
‘টাইম প্রেডিক্টেবল ফল্ট মডেলিং ফর সাইসমিক হ্যাজার্ড অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক এই গবেষণাটি চালানো হয় ২০০৯-১০ সালে। দেশের ভেতরে ও সীমানাসংলগ্ন অঞ্চলের ফাটলরেখায় (পিডিএফ) ভূমিকম্প সৃষ্টির আশঙ্কা নির্ধারণ ছিল এই গবেষণার বিষয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের পিডিএফগুলোতে আগে যত সময়ের ব্যবধানে একেকটি বড় ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে, সেই হিসাব অনুযায়ী নিকট ভবিষ্যতে তেমন কিছু হওয়ার কথা নয়। তবে পিডিএফ ছাড়া যে ফাটলরেখাগুলো আছে, বিশেষ করে ডাউকি ও মধুপুর 

ফাটলরেখা, সেগুলো অদূর ভবিষ্যতেও মধ্যম মাত্রার (রিখটার স্কেলে ৭ পর্যন্ত) ভূমিকম্পের উৎসস্থল হতে পারে। এ ছাড়া অচিহ্নিত কিছু ফাটলরেখা থাকাও অস্বাভাবিক নয়।
সরকারের খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির (সিডিএমপি) অধীনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা ডিএফআইডি এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল গবেষণার প্রতিটি পর্যায় পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করেছেন। দলে অন্য সদস্যরা ছিলেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক সফিউল্লাহ, অধ্যাপক মেহেদী আহম্মেদ আনসারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আফতাব আলম খান ও একই বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল হক (প্রয়াত)। গবেষণাটি তত্ত্বাবধান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ, বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিডিএমপির তৎকালীন জাতীয় বিশেষজ্ঞ এ এস এম মাকসুদ কামাল।
বিপজ্জনক ফাটলরেখাগুলো: ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে সদা সঞ্চরণশীল পূর্বোক্ত পিবিএফ। বাংলাদেশের অবস্থান ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটে। এই প্লেটের দুপাশে রয়েছে ইউরেশীয় প্লেট ও বার্মিজ সাব-প্লেট। বাংলাদেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও পূর্বে ওই দুটি প্লেটের প্রান্তসীমা। এই প্লেটগুলোর প্রান্তবর্তী অধিকাংশ ফাটলরেখাই বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে কিংবা সংলগ্ন এলাকায়।
ফলে এসব ফাটলরেখায় বড় কোনো ভূমিকম্পের সৃষ্টি হলে দেশের মধ্যে তার প্রভাব বিধ্বংসী হবে। তাই সাবধানতা ও সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকতে হবে। অবশ্য স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, নিকট ভবিষ্যতে এসব ফাটলরেখা বড় ভূমিকম্পের উৎস হওয়ার সম্ভাবনা কম।

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();
Powered by Blogger.