অদ্ভুতুড়ে 6:01 AM

এক নিউজিল্যান্ডকে বাদ দিলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘বড়’ দলগুলোর মধ্যে এক মাত্র শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে সর্বোচ্চ চার বার। কিন্তু, বিশ্বকাপের গল্পটা ভিন্ন!

 

২০০৩ সালের বিশ্বকাপে এক চামিন্দা ভাসের সামনেই দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশের টপ অর্ডার। হারতে হয়েছিল ১০ উইকেটের ব্যবধানে। এরপর চার বছর পরের হারের ব্যবধানটাও আকাশচুম্বি। হাবিবুল বাশার সুমনের দল সেবার হারতে হয়েছিল ১৯৮ রানে।

এরপর আট বছর কেটে গেছে। বাংলাদেশ দলে এসেছে নানা রকম পরিবর্তন। কিন্তু লঙ্কানদের বিপক্ষে বিশ্বকাপ-ভাগ্যে এলো না বিন্দুমাত্র পরিবর্তন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এবারের হারটা এলো ৯২ রানের ব্যবধানে।

৩৩৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই পেসার লাসিথ মালিঙ্গার দারুন এক বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তামিম ইকবাল। এরপর এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ভাল সূচনা পেলেও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। ২৯, ২৫ ও ২৮ রান করে ফিরে যান তারা। এছাড়া চতুর্থ স্থানে ব্যাট করতে নামা মুমিনুল হক সৌরভ মাত্র এক রানে আউট হয়ে যান।

টিম ম্যানেজমেন্টের হঠকারী সিদ্ধান্তে যথাক্রমে ছয় ও সাত নম্বর পজিশনে ব্যাট করেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। এই দু’জন লড়াই করেছিলেন। নিজেদের মধ্যে ৬৪ রানের জুটিও গড়েছিলেন। তখনও ম্যাচে বাংলাদেশের কিছুটা সুযোগ অবশিষ্ট ছিল।

কিন্তু, ৩২ তম ওভারের তৃতীয় বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন সাকিব। দিলশানের বলে লং অনে ক্যাচ ধরে একটুও ভুল করেননি লাসিথ মালিঙ্গা। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান।

১৬৪ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর মুশফিকুর রহিমের সাথে জুটি বাঁধেন সাব্বির রহমান রুম্মান। ৪৪ রানের জুটি গড়ে ৩৬ রান করে সুরাঙ্গা লাকমালের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন মুশফিক।

এ’সব কিছু ছাপিয়ে বলার মত ব্যাট করেছেন কেবল সাব্বির। মাত্র সপ্তম ওয়ানডে খেলতে নেমে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ৬২ বলে ৫৩ রান কেরে মালিঙ্গার বলে উইকেটের পিছনে সাঙ্গাকারার হাতে ক্যাচ তুলে আউট হন তিনি। ২৪০ রানে বাংলাদেশ তখন হারিয়ে ফেলেছে নয় উইকেট। এর পরের বলেই বিদায় নেন তাসকিন আহমেদ। তিন ওভার বাকি থাকতেই অল আউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

এমসিজির নয়নজুড়ানো মাঠে শুরু থেকেই ম্যাচটা হয়েছিল লঙ্কানদের। অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই সূচনা হয় লঙ্কান আধিপত্তের। এরপর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার করা প্রথম ওভারে লাহিরু থিরিমান্নের সহজ একটা ক্যাচ স্লিপে দাঁড়ানো এনামুল হক বিজয় ফেলে দিলেই যেন বোঝা হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের গতিবিধি।

সেই থিরিমান্নে শেষ অবধি থেমেছিলেন ৫২ রান করে। ২৪ তম ওভারের তৃতীয় বলে পেসার রুবেল হোসেনের বলে থার্ড ম্যানে তাসকিন আহমেদের হাতে ক্যাচ তুলে দেয়ার আগেই অবশ্য আরেক ওপেনার তিলকারত্নে দিলশানের সাথে যোগ করে ফেলেছেন ১২২ রান।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মুখে ওই একটা সময়ই হাসি ফুঁটেছিল। এরপরের বাকিটা সময়ই ছিল হতাশার মিছিল। বাকি ২৫ ওভার তিন বলে আরও কুমার সাঙ্গাকারার সাথে আরও ২১০ রান যোগ করেন দিলশান। দুজনই অপরাজিত ছিলেন নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষ হবার আগ পর্যন্ত।

প্রথম থেকে একদম শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ১৪৬ বলে ১৬১ রানের ম্যারাথন ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন দিলশান। এর আগে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে অরবিন্দ ডি সিলভা ১৪৫ রান করেছিলেন যা ছিল এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে কোন শ্রীলংকান ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ রান।

এরবাদে নিজের ৪০০ তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমে দিনটাকে স্মরনীয় করে রেখেছেন সাঙ্গাকারাও। মাত্র ৭৬ বল ব্যাটিং করে ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। এক উইকেটে ৩৩২ রানে গিয়ে থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ম্যাচটা ওখানেই হাতছাড়া হয়ে যায় বাংলাদেশের।

তবে, একটা ব্যাপার সত্যি ছ’টা ক্যাচ মিস না হলে অন্তত চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো।

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();
Powered by Blogger.