বিশ্বজুড়ে পোষা প্রাণী নিয়ে মানুষের কর্মযজ্ঞের অভাব নেই। অবসরে প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে বিড়াল, কুকুর নিয়ে নানা ধরনের আয়োজনে ব্যস্ত থাকেন। জেনে নিন বিড়ালকে নিয়ে, অবসরে নানা দেশের মানুষ যাকে নিয়ে অদ্ভুত সব কান্ড কীর্তিতে ব্যস্ত।

শহরজুড়ে বিড়ালের দাপট
জাপানের তাসিরোজিমা দ্বীপে গেলে অবাক না হয়ে উপায় থাকবে না আপনার। যেখানে যান, যে পথে হাঁটেন না কেন, শুধু বিড়াল আর বিড়াল! ছোট্ট এ দ্বীপের মানুষ বিশ্বাস করে, বিড়াল তাদের জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে। আর সে কারণেই শহরের অলিগলিতে দল বেঁধে বিড়ালকে ছুটতে দেখবেন আপনি। এখানে বিড়ালের সংখ্যা মানুষের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। তাই প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শনার্থী যায় অদ্ভুত এ দ্বীপটি দেখতে।

বিড়ালের জন্য থিয়েটার
১৯৯০ সালে রাশিয়ার মস্কোতে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মস্কো ক্যাট থিয়েটার’। গোটা থিয়েটারে কম করে হলেও ১২০টি বিড়াল আছে। থিয়েটারটি যখন কোনো প্রদর্শনীর আয়োজন করে তখন প্রতি প্রদর্শনীতে ২০টি করে বিড়াল অংশগ্রহণ করে। অদ্ভুত এ থিয়েটারটির আয়োজিত প্রদর্শনীতে সবসময়ই থাকে অজস্র মানুষের ভিড়! আর কেনই বা হবে না, বিড়ালের নাচ, স্কেট-বোর্ডিং, দড়ি লাফানো দেখতে কার না ভালো লাগে!

বিড়ালের সংগ্রহশালা
ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে বসবাসরত ৬০ বছর বয়সী পামেলা কোল যেন বিড়াল ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না। গোটা জীবন ধরে বিড়ালের নানা ধরনের সিরামিকের ভাস্কর্য সংগ্রহ করে নিজের ঘরটাকে যেন এক জাদুঘর করে ফেলেছেন। শৈশব থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ২০০টি সিরামিকের বিড়াল-ভাস্কর্য সংগ্রহ করেছেন, যেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিনই বৈকি!

বিড়ালের ব্যান্ড দল
ভাবুন তো, কোথাও কোনো স্টেজ শো দেখতে গেছেন, আর সেখানে কণ্ঠশিল্পী থেকে শুরু করে বেহালাবাদক, গিটারিস্ট, ড্রামার সবাই বিড়াল! আপনার কাছে এটা আজগুবি মনে হলেও মার্কিন মুল্লুকে এমন কা-টাই ঘটেছে। ‘রক ক্যাটস’ নামের বিড়ালের একটি ব্যান্ড দল আছে সেখানে, যে দলের সবাই বিড়াল। গিটার বাজানো থেকে শুরু করে স্টেজে উঠে নাচার সব কাজই করে থাকে ব্যান্ডের বিড়াল সদস্যরা। বিড়ালের এ ব্যান্ড দলের সব সদস্যকে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এর সঙ্গে জড়িত বিড়ালপ্রিয় উৎসুক কিছু মানুষ।

বিড়ালের জাদুঘর
মালয়েশিয়ার কুচিং শহরে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় অদ্ভুত এক জাদুঘর, যেটার সবকিছুই বিড়ালকেন্দ্রিক। জাদুঘরটিতে ঢোকার গেট থেকে শুরু করে ভেতরের সব সংগ্রহগুলোতে আছে বিড়াল-সংশ্লিষ্টতা। মালয়েশিয়ানরা মনে করেন, বিড়াল সৌভাগ্য বয়ে আনে। আর সে কারণেই বিড়ালকে নিয়ে এ আয়োজন। অদ্ভুত এ জাদুঘরে গেলে আপনি বিড়াল-সংশ্লিষ্ট প্রায় ২ হাজারটি বিভিন্ন সংগ্রহ দেখতে পাবেন, পাশাপাশি বিড়ালের ইতিহাস, বিড়াল সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সাংস্কৃতিক বিশ্বাসসহ নানা ধরনের জিনিস তো আছেই।

বিড়াল উৎসব
সাত সকালে পরীর মতো শিশুরা রাস্তায় হাজির। লাল-সবুজে মোড়া জামা আর হালকা চকোলেট রঙের পায়জামা পরে আগত এসব শিশুর মুখে সাদা-কালো রঙের বিড়ালের দাড়ি-গোঁফ আঁকা। মানবশিশুদের বিড়াল ছানার সাজ দেখলেই আপনি টের পাবেন, বিড়াল এখানে মানুষের কাছে কত গুরুত্বপূর্ণ। বেলজিয়ামে বছর বছর আয়োজিত এ উৎসবটিতে এমন সব আয়োজন করা হয়, যার মাধ্যমে বিড়ালের মিঁউ মিঁউ শব্দ করা থেকে শুরু করে কোমর বাঁকিয়ে হাঁটাকেও সম্মান ও মমতার চোখে দেখা হয়।

Post a Comment