মোবাইল হ্যান্ডসেট চুরি প্রতিরোধে চালু হতে যাচ্ছে "International Mobile Equipment Identity" (IMEI) নম্বর শনাক্তকরণ ব্যবস্থা। এ জন্য প্রত্যেক গ্রাহকের হ্যান্ডসেটের IMEI নম্বর নিবন্ধনের বিষয়ে সেলফোন অপারেটরদের প্রতি নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC)। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন নকল হ্যান্ডসেটের বিক্রিও বন্ধ হতে পারে।
প্রতিটি হ্যান্ডসেটে ১৫ সংখ্যার একটি নম্বর থাকে, যা IMEI নামে পরিচিত। সকল হ্যান্ডসেটে *#০৬# টি চাপলে IMEI নম্বর জানা যায়। এক হ্যান্ডসেটের IMEI নম্বর অন্য কোন হ্যান্ডসেটের IMEI নম্বর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়। বর্তমানে IMEI নম্বর নিবন্ধিত না হওয়ায় চুরি হলে সেলফোন উদ্ধারে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না। তা ছাড়া সেলফোনের মাধ্যমে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড শনাক্তকরণ ও হ্যান্ডসেট চুরি বা ছিনতাই রোধে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে BTRC। NEIR বাস্তবায়ন করা হলে প্রতিটি গ্রাহকের ফোন কলের সঙ্গে তার ফোন নম্বর, হ্যান্ডসেটের মডেল নম্বর ও IMEI নম্বরও অপারেটরের সার্ভারে যাবে।
ফলে সিম কার্ড বদলে ফেলা হলেও হ্যান্ডসেটের তথ্যের মাধ্যমে চুরি হওয়া হ্যান্ডসেট উদ্ধার বা অপরাধীকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া NEIR কে CEIR (সেন্ট্রাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) ও TIA (টেলিকমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন) এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে। ফলে আন্তর্জাতিকভাবে হ্যান্ডসেট শনাক্তকরণের সুবিধা পাওয়া যাবে। গত ২০ মার্চ এ-সংক্রান্ত খসড়া নির্দেশনা প্রকাশ করে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। বর্তমানে এসব মতামত যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়াশেষে চূড়ান্ত নির্দেশনা জারি করবে বিটিআরসি।
নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি সেলফোন অপারেটরকেই এনইআইআর স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি দেশের সব হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর দিয়ে ডাটাবেজ তৈরির নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে বিটিআরসি। এর মাধ্যমে হ্যান্ডসেট চুরি ও নকল হ্যান্ডসেট প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। এটি স্থাপন করা হলে আইএমইআই নম্বরবিহীন হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে ফোন করা হলে তা বন্ধ করে দেয়া যাবে। আর নিবন্ধিত আইএমইআই নম্বরযুক্ত হ্যান্ডসেট চুরি হলে তা সহজেই উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
অপরদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) কল প্রতি ১০ সেকেন্ড পালস চালু করার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সেলফোন অপারেটর টেলিটক ছাড়া বাকি পাঁচ অপারেটরকে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হলেও এ নির্দেশ এখনো বাস্তবায়ন করেনি পাঁচ অপারেটর। এ প্রসঙ্গে BTRC এর চেয়ারম্যান বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ ব্যবস্থা কার্যকর না করায় লাইসেন্সিং নীতিমালার শর্ত ও টেলিযোগাযোগ আইনের লঙ্ঘন করেছে অপারেটররা। কেন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি তার জবাব দিতে বলা হয়েছে তাদের। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
BTRC এর নির্দেশনা কার্যকর হলে প্রতি ১০ সেকেন্ডের জন্য বিল দিতে হবে গ্রাহকদের। বর্তমানে প্রতি মিনিট হিসাবে বিল দিতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
Post a Comment