প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। কিছু ভৌতিক অভ্যাসের বসেই আমরা হয়ত এমন কিছু কাজ-কর্ম করি যার ফলে আমাদের নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এবার চলুন জেনে নেই আমাদের কিছু প্রযুক্তিগত ভৌতিক অভ্যাস, যা ত্যাগ করা উচিত।
◘ একই পাসওয়ার্ড সব জায়গায় ব্যবহার করা
এটি মনে হয় খুব কমন একটা ভৌতিক সমস্যা। অনেকেই মনে করেন একগাদা পাস ওয়ার্ড মনে রাখার চাইতে একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের জন্য ব্যবহার করেন।
আপনি জানেন এটা কতটা ভৌতিক আকারের বিপদজনক হতে পারে যদি একজন হ্যাকার আপনার একটি পাসওয়ার্ড বের করতে পারে তবে সে আপনার প্রতিটা অ্যাকাউন্ট অতি সহজেই হ্যাক করতে পারবে। তাই সব সময় চেষ্টা করবেন আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে।
◘ কখনোই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন না করা
আমাদের আরেকটা ভৌতিক স্বভাব হচ্ছে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন না করা। আমরা দীর্ঘদিন একই পাসওয়ার্ড ইউজ করি যা ঠিক না। মাইক্রোসফট এর মতে প্রত্যেকের উচিত ৩০ থেকে ৯০ দিন পর পর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা।
◘ অ্যাকাউন্ট সিকিউর করতে টু-স্টেপ অথেনটিকেশন ব্যবহার না করা
বর্তমানে যে হারে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হচ্ছে তাতে আমাদের প্রত্যেকের উচিত কিছু আলাদা সাবধানতা অবলম্বন করা আমাদের অনলাইন অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে। তাই টু-স্টেপ অথেনটিকেশন আমাদের অ্যাকাউন্টকে আরও নিরাপদ করে তুলে। যেমন: জিমেইল ও ড্রপ বক্স টু-স্টেপ অথেনটিকেশন সার্ভিস প্রদান করে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে গেলে একটা ভেরিফিকেশন কোড আপনার মোবাইলে পাঠানো হবে। যা আপনাকে টাইপ করে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে হবে। এই প্রক্রিয়ার ফলে বাহিরের ভৌতিক কেউ আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারবেনা।
◘ মোবাইল থেকে ছবি ও মিউজিক ডিলিট করতে ভুলে যাওয়া
অনেকেই নিজের মোবাইল থেকে পুরনো ছবি ও গান মুছতে ভুলে যান। ফলে দেখা যায় এসব অপ্রয়োজনীয় ছবি ও গান আপনার মোবাইলের অনেক জায়গা দখল করে রাখে তখন নতুন ছবি তুলতে গেলে বা গান ডাউনলোড করতে গেলে দেখা যায় আপনার ফোনে আর জায়গা নেই। তাই আপনি এই ক্ষেত্রে একটা ব্যাকআপ রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন যেমন ড্রপবক্স বা গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করে আপনি আপনার পুরনো কালেকশনগুলো জমা করে রাখতে পারেন। সব সময় নিজের ফোনটা ক্লিন রাখার চেষ্টা করুন।
◘ বেশিক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা
অনেকেই আছেন যারা ৯-৫ টা ডেস্ক জব করেন ফলে দেখা যায় দিনের ৮ ঘণ্টাই তাদের কম্পিউটারের সামনে ভৌতিক ভাবে বসে থাকা লাগে। বিভিন্ন গবেষকেরা জানান একদিনে ৮ ঘণ্টা কম্পিউটারের এর সামনে বসে থাকা অনেক বিপদজনক হতে পারে কেননা এতে স্কেলেটাল, ডায়াবেটিস সহ আরও অনেক রোগের ঝুঁকি বেরে যায়। এছাড়া একটানা মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের ও অনেক ক্ষতি হয়। তাই এইরকম ক্ষেত্রে একটা জিনিস মাথায় রাখবেন আপনার কম্পিউটারের মনিটর যেন সব সময় আপনার চোখ থেকে অনেকটা দূরে থাকে।
অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন ডিভাইস থেকে নিজের যেমন ফেসবুক, গুগল, স্কাইপি অ্যাকাউন্টে ঢুকে থাকেন কিন্তু লগ আউট করতে ভুলে যান যা আপনার জন্য বিপদজনক হতে পারে কেননা যদি অন্য কেউ ঐ ডিভাইস ব্যবহার করেন তবে আপনার অ্যাকাউন্টের সব তথ্য দেখতে পাবে। তাই বাহিরের কোন ডিভাইস দিয়ে যদি নিজের অ্যাকাউন্টে ঢুকেন তবে লগআউট ঠিক ভাবে করেছেন কিনা তা খেয়াল রাখবেন।
◘ কখনোই কম্পিউটার রিস্টার্ট না করা
সব সময় আপনার কম্পিউটারটি স্লিপ ও স্ট্যান্ডবাই মুডে রাখলে হয়ত আপনার হয়ত কম্পিউটারের ক্ষতি হবেনা তবে এটি আপনার কম্পিউটারকে স্লো করে ফেলে। তাই মাঝে মাঝে আপনার কম্পিউটারটি রিস্টার্ট করলে ব্যাকগ্রাউন্ডের প্রগ্রামগুলো বন্ধ করে ফলে কম্পিউটারের স্পীড বাড়বে।
◘ ঘুমানর আগে বার বার নিজের ফোন চেক করা
বিজ্ঞানীদের মতে মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর পেছনে স্মার্টফোন অনেকটাই দায়ী। কেননা অনেকেই আছেন যারা ঘুমানোর আগে বিছানায় শুয়ে ফোন ঘাটাঘাটি করেন ফলে ঘুমের সাইকেল নষ্ট হয় এতে ঘুম আসতে দেরি হয় যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া গবেষকেরা জানান মোবাইল থেকে যে আলো বের হয় তা আমদের চোখের জন্যও ক্ষতিকর।
◘ গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ইন্সটল না করা
স্মার্ট ফোন গুলতে সফটওয়্যার আপডেটের প্রয়োজন হয়। এইসব সফটওয়্যার আপডেট করা অনেকটা সময়ের ব্যাপার তাই অনেকেই আপডেট না করে বসে থাকেন। ফলে দেখা যায় আপনার ফোনটি অনেক স্লো হয়ে যায়। তাই অবহেলা না করে সময় মতো গুরুত্বপূর্ণ আপডেট গুলো ইন্সটল করা উচিত এতে আপনার ফোনের যাবতীয় ভাইরাস দূর হবে এছাড়া সিকিউরিটিও বৃদ্ধি পাবে।
◘ গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের ব্যাকআপ না রাখা
আমরা অনেকেই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ছবি ফাইল, কন্টাক্ট নাম্বারের ব্যাকআপ রাখিনা ফলে যদি আমাদের ফোন কোন কারণে চুরি হয়ে যায় বা হারিয়ে তখন দেখা যায় আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা হারিয়ে ফেলি তাই সব সময় আপনার দরকারি তথ্যের একটা ব্যাকআপ রাখুন। শুধু ফোনের ক্ষেত্রে নয় আপনার ডেক্সটপ কিংবা ল্যাপটপে থেকেও ভুলবশত ডিলিট হতে পারে অনেক দরকারি ফাইল। এইসব ক্ষেত্রে আপনি গুগল ড্রাইভ বা ড্রপ বক্স ব্যবহার করতে পারেন ব্যাকআপ হিসাবে যেখানে আপনার দরকারি ফাইলগুলো জমা করে রাখতে পারবেন।

Post a Comment