বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ফ্যানের পাখা ঘোরানোর জন্য । যার ফলে লোডশেডিং এর সময় আমাদের বেশ অস্বস্তি পোহাতে হয়।নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠে মোমবাতি। এতে আলোর চাহিদা কিঞ্চিৎ মিটলেও গরমে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে। যদি মোমের আলোয় পাখাও ঘুরে তাহলে কেমন হয় ?নিশ্চয় চোখ কপালে তুলে বলবেন কিভাবে সম্ভব ?
এই বিস্ময়কর আবিষ্কারটি করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দীপ্ত সরকার। তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে মোমবাতি আলো ছড়ানোর পাশাপাশি চালাবে পাখাও। কাচেরচেম্বারে মোমবাতির রাখার দুই মিনিটের মধ্যে ঘুরে উঠবে পাখা। এটি একনাগাড়ে ১০ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে।
![]() |
ঘুরবে পাখা ভনভনিয়ে মোমের আলোয় |
একটি প্রকল্প ‘ডিজাইন অ্যান্ড ফেবরিকেশন অব এ টার্মোইলেক্ট্রিক জেনারেটর পাওয়ারড বাই ক্যান্ডেললাইট’’ শিরোনামে বাস্তবায়ন করেন দীপ্ত সরকার। তিনি বলেন,‘আমরা বিদ্যুতের উপর পুরোপুরি ভাবে নির্ভরশীল। কিন্তু দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিদ্যুৎ যোগান দেওয়া কোনভাবে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় ভুগছে লোকজন। এ যন্ত্রণা থেকে নিস্তার পেতে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা জেনারেটর বা আইপিএসের উপর নির্ভর করে। কিন্তু গরমের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পান না নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত লোকজন। কারণ অনেকেরই জেনারেটর কিংবা আইপিএস কেনার সামর্থ্য নেই। বিদ্যুৎ উৎসের চিন্তা করতে থাকি নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত লোকজনের কথা চিন্তা করে বিকল্প। একসময় মোমবাতির তাপ শক্তি দিয়ে ফ্যান চালানোর পরিকল্পনাটি মাথায় আসে।
তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেই আমরা মোমবাতি ব্যবহার করি। আলো ও তাপ দুটোই আমরা পেয়ে থাকি মোমবাতি থেকে । কিন্তু আলো ব্যবহার করলেও তাপ শক্তি কোন কাজে লাগানো হয় না।এ তাপ শক্তি দিয়ে থার্মোইলেক্ট্রিক যন্ত্রের মাধ্যমে ছোট আকারের একটি ফ্যান চালানো সম্ভব। বাণিজ্যিকভাবে এটি উৎপাদনে ব্যয় হবে মাত্র ১৫০০ টাকা। থার্মোইলেক্ট্রিক যন্ত্র দিয়ে টানা ১০ হাজার ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
![]() |
ঘুরবে পাখা ভনভনিয়ে মোমের আলোয় |
তিনি আরও জানান, এক টুকরো কাঠ, একটি কাচের বাক্স, একটি থার্মোইলেকট্রিক কুলার, বেশ কিছু অ্যালুমিনিয়ামের পাত, একটি ফ্যান, একটি ইলেকট্রিক মোটর ও লোহারপাত দিয়ে এটি তৈরি করা যাবে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের সহকারি অধ্যাপক সানাউল বারী বলেন, বর্তমানে যে লোডশেডিং তাতে দীপ্ত সরকারের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি খুবই কাজে আসবে। কারণ এটির লাইফটাইম প্রায় ১০ হাজার ঘণ্টা। প্রকল্পটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে প্রযুক্তিটিস্বল্প খরচে বাণিজ্যিভাবে তৈরি করা সম্ভব। তখন এটি আরও মোডিফাই করা যাবে।
Post a Comment