২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিস্ময়কর একটি চশমার ধারণা দিয়ে সারা বিশ্বে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল গুগল ৷ এই পর্যন্ত গুগল গ্লাস নামে পরিচিত এই জিনিষটি আসলে মোবাইল কম্পিউটার আর চশমার মিলিত এক শঙ্কর । এই চশমাটি দিয়ে যেমন ছবি তোলা যায় তেমনি যায় ইন্টারনেট ব্যবহার কিমবা ভিডিও রেকর্ড করা এমন কি এসএমএস পাঠানো, এমন সব কাজ করা যায় ৷ অর্থাৎ সাম্প্রতিক স্মার্টফোন দিয়ে যা করা সম্ভব তা-ই করা যায় চোখে পরা এই চশমাটি বা গুগল গ্লাস দিয়ে ৷
গুগল গ্লাস এখন ব্যবহার করছেন নির্বাচিত কিছু ব্যক্তি, যার মধ্যে রয়েছেন সফটওয়্যার ডেভেলপার, প্রোগ্রামার এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ব্যাক্তি ইত্যাদি ৷ তাদের দেয়া বিভিন্ন পরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি হবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য গুগল চশমা ৷ নির্বাচিত এই ব্যক্তিরা দেড় হাজার ডলার দিয়ে গুগল গ্লাস কিনেছেন ৷ গুগলের নির্বাহী চেয়ারম্যান এরিক স্মিডট বলেছেন, ‘কিছুদিন' এর মধ্যেই চশমাটি বাজারে আসতে পারে৷ আর দামটা স্মার্টফোনের চেয়ে বেশিই হবে বলে আগেই জানিয়েছিল গুগল৷
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে গুগলের একটি সম্মেলনে এই বিস্ময় চশমা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে ৷ প্রোগ্রামারদের এই সম্মেলনে অনেকেই চশমা পরে উপস্থিত হয়েছিলেন সম্মেলনে ৷ সেখানেই ফেসবুক আর টুইটার গুগল গ্লাসের জন্য তৈরি অ্যাপ এর উদ্বোধনী ঘোষণা দেয় ৷ এর ফলে ব্যবহারকারীরা চশমা দিয়ে ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গেই সেটা ফেসুবকে আপলোড পারবেন ৷ তেমনি সেটা পোস্ট করা যাবে টুইটারেও ৷
কিছু বিষয়ে আপত্তি
গুগল গ্লাস এখনো সাধারণের কাছে না এলেও আইন প্রণেতা থেকে শুরু করে অনেকেই এর কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি উঠেছে ৷ যেমন ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা থাকার কারণে যত্রতত্র এর ব্যবহার ঠিক হবে কিনা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ যেমন গুগলের সম্মেলনেই অনেককে এই চশমা পরে টয়লেটে যেতে দেখা গেছে ৷ যদিও তারা বলছেন ভুল করেই তারা ভিডিও ক্ষমতা সম্পন্ন এই চশমা পরে টয়লেটে চলে গিয়েছিলেন, তবুও সেটা ঠিক হয়নি বলেই মনে করছেন অনেকে ৷ এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ক্যাসিনো ও বার এ গুগল গ্লাস নিয়ে ঢোকাটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৷
গুগলের বক্তব্য : গুগল কর্তৃপক্ষের দাবি, যেহেতু কম্পিউটারের ক্ষমতাসম্পন্ন চশমার ব্যবহার এখনো নতুন পর্যায়ে রয়েছে তাই টুকটাক ভুল হতে পারে৷ যেমনটা হয়েছিল মোবাইল ফোন আসার সময়৷ কিন্তু যখন মোবাইলের ব্যবহার বেড়ে গেল তখন ব্যবহারকারীরা নিজে থেকেই কিছু নিয়ম মেনে চলা শুরু করে৷ যেমন বাসে থাকার সময় মোবাইলে জোরে কথা না বলা, বৈঠকে থাকার সময় রিংটোন বন্ধ করে রাখা ইত্যাদি৷ গুগল গ্লাসের ব্যবহারও যখন বাড়বে তখনো মানুষ নিজের মতো করে নিয়ম বানিয়ে নেবে বলেই মনে করছে গুগল কর্তৃপক্ষ৷
Post a Comment